سَيِّئَاتِ أَعْمَالِنَا، مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ، وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا ٱتَّقُوا ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর যেমনভাবে তাঁকে ভয় করা উচিত। তোমরা মুসলিম না হয়ে কক্ষনো মৃত্যুবরণ করো না। (আলে ইমরান ৩:১০২)
শরীয়াহর মূলনীতি, মুজতাহিদ উলামা ও নেতৃবৃন্দের লেখনি-আলোচনা, ঐতিহাসিক ও সার্বজনীন প্রমাণাদির আলোকে মানহাজের আলোচনা আমরা করতে যাচ্ছি। এটি একটি সাধারণ আউটলাইন মাত্র। বিশদ খুঁটিনাটি ও সূক্ষ্ম আলোচনা এখানে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
মানুষের সৃষ্টির উদ্দেশ্যঃ
وَهُوَ ٱلَّذِى جَعَلَكُمْ خَلَـٰٓئِفَ ٱلْأَرْضِ وَرَفَعَ بَعْضَكُمْ فَوْقَ بَعْضٍۢ دَرَجَـٰتٍۢ لِّيَبْلُوَكُمْ فِى مَآ ءَاتَىٰكُمْ ۗ إِنَّ رَبَّكَ سَرِيعُ ٱلْعِقَابِ وَإِنَّهُۥ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌۢ
আর তিনি সে সত্তা, যিনি তোমাদেরকে যমীনের খলীফা বানিয়েছেন এবং তোমাদের কতককে কতকের উপর মর্যাদা দিয়েছেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে যা প্রদান করেছেন, তাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন। নিশ্চয় তোমার রব দ্রুত শাস্তিদানকারী এবং নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
আল-আন‘আম ৬:১৬৫
وَلَا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعْنَا بِهِۦٓ أَزْوَٰجًا مِّنْهُمْ زَهْرَةَ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا لِنَفْتِنَهُمْ فِيهِ ۚ وَرِزْقُ رَبِّكَ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ
আর তুমি কখনো প্রসারিত করো না তোমার দু’চোখ সে সবের প্রতি, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে দুনিয়ার জীবনের জাঁক-জমকস্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসেবে দিয়েছি। যাতে আমি সে বিষয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করে নিতে পারি। আর তোমার রবের প্রদত্ত রিযক সর্বোৎকৃষ্ট ও অধিকতর স্থায়ী।
তাহা ২০:১৩১
ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْمَوْتَ وَٱلْحَيَوٰةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا ۚ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْغَفُورُ
যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।
আল-মুল্ক ৬৭:২
كُلُّ نَفْسٍۢ ذَآئِقَةُ ٱلْمَوْتِ ۗ وَنَبْلُوكُم بِٱلشَّرِّ وَٱلْخَيْرِ فِتْنَةً ۖ وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
প্রতিটি প্রাণ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আর ভাল ও মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে।
আল-আম্বিয়া ২১:৩৫
وَلِذَٰلِكَ خَلَقَهُمْ ۗ وَتَمَّتْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنَ ٱلْجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ أَجْمَعِينَ
আর এজন্যই তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমার রবের কথা চূড়ান্ত হয়েছে যে, ‘নিশ্চয়ই আমি জাহান্নাম ভরে দেব জিন ও মানুষ দ্বারা একত্রে’।
হুদ ১১:১১৯
كَانَ ٱلنَّاسُ أُمَّةً وَٰحِدَةً فَبَعَثَ ٱللَّهُ ٱلنَّبِيِّـۧنَ مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ ٱلْكِتَـٰبَ بِٱلْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ ٱلنَّاسِ
মানুষ ছিল এক উম্মত। অতঃপর আল্লাহ সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে নবীদেরকে প্রেরণ করলেন এবং সত্যসহ তাদের সাথে কিতাব নাযিল করলেন, যাতে মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেন।
আল-বাকারাহ ২:২১৩
وَٱلْعَصْرِ
সময়ের কসম,
إِنَّ ٱلْإِنسَـٰنَ لَفِى خُسْرٍ
নিশ্চয় সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততায় নিপতিত।
إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا وَعَمِلُوا ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَتَوَاصَوْا بِٱلْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِٱلصَّبْرِ
তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।
আল-‘আস্র
ثُمَّ جَعَلْنَـٰكُمْ خَلَـٰٓئِفَ فِى ٱلْأَرْضِ مِنۢ بَعْدِهِمْ لِنَنظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ
তারপর আমি তোমাদেরকে যমীনে তাদের পরে স্থলাভিষিক্ত করেছি, যাতে আমি দেখি তোমরা কেমন আমল কর।
ইউনুস ১০:১৪
নবী (আঃ), কিতাব নাযিলের উদ্দেশ্য ব্যক্তিজীবন, পরিবার ও সমাজে দীন কায়েম করা। একটির জন্য আরেকটি থেমে থাকবে না। অর্থাৎ, স্ত্রীর হক আদায় করার পূর্বে সকল ফরজ-ওয়াজিব ব্যক্তিগত ইবাদত (সিয়াম, হজ্ব বা হারাম বর্জন) প্রতিপালন পূর্বশর্ত এমন নয়।
ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক সকল ফরজ আদায়ই তাওহীদের দাবী। তবে ব্যক্তি, পারিপার্শ্বিকতা ও সময় বিবেচনায় কোনো আমলের গুরুত্ব কম বেশী হয়ে থাকে। দীনকে পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ ও কায়েম করতে হবে।
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا
অতএব তুমি একনিষ্ঠ হয়ে দীনের জন্য নিজকে প্রতিষ্ঠিত রাখ।
আর-রূম 30:30
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُو ٱدْخُلُوا فِى ٱلسِّلْمِ كَآفَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَـٰنِ ۚ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে মুমিনগণ, তোমরা ইসলামে পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু।
আল-বাকারাহ 2:208
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُشْرِكُونَ
তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্যদ্বীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি সকল দ্বীনের উপর তা বিজয়ী করে দেন। যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।
আস-সফ 61:9
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ ۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِيدًا
তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি এটাকে সকল দীনের উপর বিজয়ী করতে পারেন। আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
আল-ফাত্হ 48:28
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُشْرِكُونَ
তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীন সহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি একে সকল দীনের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা অপছন্দ করে।
আত-তাওবাহ 9:33
شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحًا وَٱلَّذِىٓ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِۦٓ إِبْرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓ ۖ أَنْ أَقِيمُوا ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ ۚ
তিনি তোমাদের জন্য দীন বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন; যে বিষয়ে তিনি নূহকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর আমি তোমার কাছে যে ওহী পাঠিয়েছি এবং ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে যে নির্দেশ দিয়েছিলাম তা হল, তোমরা দীন কায়েম করবে এবং এতে বিচ্ছিন্ন হবে না।
আশ-শুরা 42:13
كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِٱلْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ ٱلْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ ۗ
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত,যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করবে।
আলি ‘ইমরান 3:110
কেন ইসলামের বিজয় ও কর্তৃত্ব প্রয়োজন?
• ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে (অধীনস্থদের উপরে বিশেষত ) দীন কায়েমের আলোচনা ও সংস্কৃতি আলহামদুলিল্লাহ আমাদের মাঝে আছে। কিন্তু সামাজিকভাবে দীন কায়েমের রূপরেখা আমাদের নিকট অস্পষ্ট। যদিও আমরা জানি যে, ইসলামি শাসনব্যবস্থা/শর'ঈ শাসন কায়েম ছাড়া সমাজে দীন কায়েম হবে না। এজন্যই ইকামতে দীনের ফরজ আদায় বলতে ব্যক্তি, পরিবারের পাশাপাশি শাসনব্যবস্থায় ইসলামের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে আনা আবশ্যক। বরং, ইসলামি শাসনব্যবস্থা ব্যতীত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে পুরোপুরি দীন কায়েম সম্ভব না।
এছাড়াও আল্লাহ তা আলা বলেন,
اَلَّذِیۡنَ اِنۡ مَّكَّنّٰهُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوۃَ وَ اَمَرُوۡا بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ نَهَوۡا عَنِ الۡمُنۡكَرِ ؕ وَ لِلّٰهِ عَاقِبَۃُ الۡاُمُوۡرِ
তারা এমন যাদেরকে আমি যমীনে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে; আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই অধিকারে।
(সূরা হাজ্জ, ২২:৪১)
সমাজে সালাত, যাকাত ও আমর বিল মারুফ-নাহি আনিল মুনকারের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে ক্ষমতা অর্জন জরুরি। আর ক্ষমতা লাভের উদ্দেশ্যই হচ্ছে এই তিনটি। সমাজে সালাত কায়েম করা, যাকাতের ফায়দা নিশ্চিত এবং সাম্য, সুবিচার ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা করা কর্তৃত্ব অর্জন ব্যাতীত সম্ভব না।
ইসলামী শাসন ছাড়া পূর্ণ শরিয়ার উপর আমল করা সম্ভব নয়। ইসলামী জীবনব্যবস্থার একটি স্বতন্ত্র অংশ এমন রয়েছে যার উপর আমল করতে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিকল্প নেই। ইসলামী শাসন ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে কুরআনের একটি বড় অংশ আমলের উপযুক্ততা হারায়। খোদ ইসলামের সুরক্ষাও শক্তি ছাড়া সম্ভব নয়। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামের অর্থব্যবস্থা, ইসলামী আইন ও বিচারব্যবস্থা এর কোনটাই ইসলামী শাসন ছাড়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই কুরআন শক্তি সঞ্চয় ও বিজয় অর্জনের উপর খুব গুরুত্ব আরোপ করেছে। এজন্য ইসলামী খিলাফা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র বিষয়। সাহাবারা খিলাফাহকে রাসূলুল্লাহর দাফন কাফনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন। অনেক স্বল্পবুদ্ধির লোক এই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেনা। এই খেলাফতের হেফাজতের জন্য হযরত হোসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কোরবানি পেশ করেছেন, যাতে খেলাফতের উদ্দেশ্য ব্যর্থ না হয়ে যায়।
তারিখে দাওয়াত ওয়া আজিমত (সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস) ষষ্ঠ খন্ড।
তাই ব্যক্তি, পরিবারে দীন কায়েম এর নিরন্তর প্রক্রিয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জনের মাধ্যমে পরিপূর্ণ দীন কায়েম আরো বড় ফরজ।
আর সামগ্রিকভাবে দীন কায়েমের পূর্বশর্ত শক্তি।
وَأَعِدُّوا لَهُم مَّا ٱسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍۢ
আর তাদের মুকাবিলার জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তি প্রস্তুত কর,
আল-আনফাল 8:60
• ইজহারে দীন বা দীন কায়েম অত্যন্ত জরূরী এজন্যই যে এছাড়া সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, হিদায়াত ও দাওয়াহর পথ সংকীর্ণ হয়ে যায়। বান্দার ইবাদত অপূর্ণ থাকে। সামগ্রিকভাবে দীন কায়েমের মাধ্যমেই মানূষের কল্যাণ নিশ্চিত হয়।
এ লক্ষ্যেই জিহাদ করা হয় এবং এজন্যই জিহাদের ফযিলত এতো বেশী-
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَـٰرَةٍۢ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍۢ
হে ঈমানদারগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসায়ের সন্ধান দেব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে রক্ষা করবে?
আস-সফ 61:1০
تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُجَـٰهِدُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمْوَٰلِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْر لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
তোমরা আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তোমরা তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।
আস-সফ 61:11
يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّـٰتٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ وَمَسَـٰكِنَ طَيِّبَةً فِى جَنَّـٰتِ عَدْنٍۢ ۚ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ
তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আর তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত এবং চিরস্থায়ী জান্নাতসমূহে উত্তম আবাসগুলোতেও (প্রবেশ করবেন) । এটাই মহাসাফল্য।
আস-সফ 61:12
দীন কায়েমের পথে যে পদক্ষেপই নেয়া হয়, যে কষ্টই হোক তার সওয়াব নিশ্চিত হয়-
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ لَا يُصِيبُهُمْ ظَمَأٌ وَلَا نَصَبٌ وَلَا مَخْمَصَةٌ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلَا يَطَـُٔونَ مَوْطِئًا يَغِيظُ ٱلْكُفَّارَ وَلَا يَنَالُونَ مِنْ عَدُوٍّۢ نَّيْلًا إِلَّا كُتِبَ لَهُم بِهِۦ عَمَلٌ صَـٰلِحٌ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ ٱلْمُحْسِنِينَ
… এমন কক্ষনো হবে না যে, তারা আল্লাহর পথে তৃষ্ণা, দৈহিক ক্লেশ ও ক্ষুধা ভোগ করবে, কাফিরদের ক্রোধ উদ্রেককারী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে আর শত্রুদের নিকট থেকে কিছু লাভ করবে আর তার বিনিময়ে তাদের জন্য কোন নেক ‘আমাল লেখা হবে না (অবশ্যই লেখা হবে)। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের প্রতিফল বিনষ্ট করেন না।
আত-তাওবাহ 9:120
وَلَا يُنفِقُونَ نَفَقَةً صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً وَلَا يَقْطَعُونَ وَادِيًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ لِيَجْزِيَهُمُ ٱللَّهُ أَحْسَنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
আর তারা স্বল্প কিংবা অধিক যা-ই ব্যয় করে এবং অতিক্রম করে যে প্রান্তরই, তা তাদের জন্য লিখে দেয়া হয়, যাতে তারা যা আমল করত, আল্লাহ তাদেরকে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেন।
আত-তাওবাহ 9:121
এলক্ষ্যে যে যতটুকু অবদান রাখবে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট তার ততটুকুই মর্যাদা নিশ্চিত হবে এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়ার মাত্রানুযায়ী শাস্তি হয়-
وَأَنِ ٱسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوٓا إِلَيْهِ يُمَتِّعْكُم مَّتَـٰعًا حَسَنًا إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمّى وَيُؤْتِ كُلَّ ذِى فَضْلٍۢ فَضْلَهُۥ ۖ وَإِن تَوَلَّوْا فَإِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍۢ كَبِيرٍ
আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও। তারপর তার কাছে ফিরে যাও, (তাহলে) তিনি তোমাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম ভোগ-উপকরণ দেবেন এবং প্রত্যেক আনুগত্যশীলকে তাঁর আনুগত্য মুতাবিক দান করবেন। আর যদি তারা ফিরে যায়, তবে আমি নিশ্চয় তোমাদের উপর বড় এক দিনের আযাবের ভয় করছি।
(হুদ 11:3)
لَا يَسْتَـْٔذِنُكَ ٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْـَٔاخِرِ أَن يُجَـٰهِدُوا بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ ۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِٱلْمُتَّقِينَ
যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, তারা তোমার কাছে তাদের মাল ও জান দিয়ে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকার অনুমতি চায় না, আর আল্লাহ মুত্তাকীদের সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত।
(আত-তাওবাহ 9:44)
• আল্লাহর পথে বের হবার ও লেগে থাকার কল্যান:
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا وَٱلَّذِينَ هَاجَرُوا وَجَـٰهَدُوا فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ أُولَـٰٓئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ ٱللَّهِ ۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও যারা হিজরত করেছে এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহর রহমতের আশা করে। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
আল-বাকারাহ 2:218
• ঈমান ইয়াক্বিন বৃদ্ধি:
ٱلَّذِينَ قَالَ لَهُمُ ٱلنَّاسُ إِنَّ ٱلنَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَٱخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَـٰنًا وَقَالُوا حَسْبُنَا ٱللَّهُ وَنِعْمَ ٱلْوَكِيلُ
যাদেরকে মানুষেরা বলেছিল যে, ‘নিশ্চয় লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে ভয় কর’। কিন্তু তা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক’!
আলি ‘ইমরান 3:173
বিজয় কোন পথে?
• এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই যে, গণতান্ত্রিক বা সেক্যুলার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শক্তি অর্জনের চেষ্টা হারাম। যেমন- মসজিদ বানানোর উদ্দেশ্যে চুরি করা বৈধ হবে না কখনই।
মুওয়াহ্হিদ পাশাপাশি, রাসূল (সাঃ) এর সুন্নাহ ও সীরাহ এবং উম্মতের নেতৃবর্গের চিন্তাধারা ও দিকনির্দেশনাকে আমলে না নিয়ে ভুল রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় premature (অপরিপক্ব) ও dangerous (দ্বীনের ও মুসলিমদের জন্য অলাভজনক) কর্মকান্ড দ্বীন কায়েমে ফল এনে দিবে না। স্বেচ্ছায় জনবিচ্ছিন্ন হওয়া, রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা না বোঝা কর্মসূচী দীন কায়েমের সর্বোত্তম পথ নয় আমরা মনে করি।
তবে, আমরা সকল ইসলামি দল ও মুসলিমদের কল্যান চাই, তাদের আফিয়াত (ক্ষমা) লাভের দোয়া করি। তাদের মাধ্যমেও দীন কায়েম হলে আমরা অবশ্যই মেনে নিব বি ইয নিল্লাহ। কেননা আমরা শারীয়াহ দ্বারা শাসিত হতে চাই, শাসক হওয়া আমাদের জন্য অপরিহার্য নাও হতে পারে।
• রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ক্ষেত্রে সামাজিক শক্তি অর্জন জরুরী। সামাজিক শক্তি বলতে আমরা বোঝাচ্ছি- পরিবর্তনের লক্ষ্যে চাপ প্রয়োগ ও দাবী আদায়ে কোন অংশের/গোষ্ঠীর (ইসলামপন্থীদের) অর্জিত শক্তি। যেমন- হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিভিন্ন ইসলামবিরোধী নীতি প্রতিহতকরণে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি অর্জন করেছে তা তাদের সামাজিক শক্তি। পর্যায়ক্রমে এই শক্তি যখন সেক্যুলার শাসনব্যাবস্থা উৎখাতের জন্য পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ এবং ইসলামি শাসনব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবী আদায়ের পর্যায়ে উন্নতি হবে - তখন দীন কায়েমের সফলতা দেখা দিয়েছে বলা যাবে।
অর্থাৎ, সমাজের বিভিন্ন বর্গ (ছাত্র,শিক্ষক,কৃষক,শ্রমিক,উলামা-আওয়াম) কে যখন ইসলামী/শরঈ কর্তৃত্বের জন্য আমাদের দাওয়াহ, সাংগঠনিক কর্মসূচী ও নেতৃত্বের ফলস্বরূপ সক্রিয়ভাবে সংগঠিত হবে, তখনই আমরা দীন কায়েমের বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করবো বি ইয নিল্লাহ। পর্যাপ্ত শক্তি অর্জনের পর চূড়ান্ত ফয়সালার ধরণ পরিস্থিতি ও সময় সাপেক্ষে নির্ণয় হবে।
وَلَوْ يَشَآءُ ٱللَّهُ لَٱنتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَـٰكِن لِّيَبْلُوَا بَعْضَكُم بِبَعْضٍۢ ۗ
আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তোমাদের একজনকে অন্যের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান।
মুহাম্মাদ 47:4
وَلَوْلَا دَفْعُ ٱللَّهِ ٱلنَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍۢ لَّفَسَدَتِ ٱلْأَرْضُ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ ذُو فَضْلٍ عَلَى ٱلْعَـٰلَمِينَ
আর আল্লাহ যদি মানুষের কতককে কতকের দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে অবশ্যই যমীন ফাসাদপূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ বিশ্ববাসীর উপর অনুগ্রহশীল।
আল-বাকারাহ 2:251
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّىٰ نَعْلَمَ ٱلْمُجَـٰهِدِينَ مِنكُمْ وَٱلصَّـٰبِرِينَ وَنَبْلُوَا أَخْبَارَكُمْ
আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি প্রকাশ করে দেই তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল এবং আমি তোমাদের কথা- কাজ পরীক্ষা করে নেব।
মুহাম্মাদ 47:31
আমরা জানি, তীব্র সংঘাত ছাড়া সাধারণত ইসলাম ও কুফরের এই দ্বন্দ্বের মীমাংসা হয়ও না। আমাদের মতো দেশে সৈনিক-পেশাজীবী ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আদর্শিক আন্দোলনের পথ ধরেই এপথে সফলতা আসে। মানুষের সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা, মিথ্যার বিরুদ্ধে তীব্র, শক্তিশালী মেরূকরণ এবং যোগ্য, আত্মত্যাগী ও দূরদর্শী নেতৃত্বের উপস্থিতি অর্জনের আগে শুধু সংঘাত-সহিংসতা কোনো ফলাফল এনে দিবে না। তাই এ পথ কোন ত্বরাপ্রবণ, অতিআবেগীর পথ নয়। তাওহীদের আক্বীদা, নববী সুন্নাত ও সালাফদের মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ও অনুসারীদের সমন্বয়ে অগ্রসরমান সংগঠন ব্যতীত দীন কায়েমের আশা করা ভুল। ধারাবাহিক দাওয়াহ, তরবিয়ত, সংগ্রাম ও সংশোধনের পথ ধরেই আদর্শিক দৃঢ়তা, বৈপ্লবিক চেতনা ও রাজনৈতিক জ্ঞান-প্রজ্ঞা অর্জনে সক্ষম সংগঠিত শক্তি গড়ে ওঠে।
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে- স্রেফ ক্ষমতা, অর্থ ও প্রতিপত্তি লাভকে উদ্দেশ্য করা সুস্থ চিন্তার কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব না। একজন মুসলিমের জন্য তো নয়ই। আমরা মুসলিমরা আমাদের আদর্শকে বিজয়ী দেখতে চাই। শাসক হবার উদগ্র বাসনার চেয়ে, শারিয়াহ শাসিত হবার আগ্রহই আমাদের বেশি। অর্থাৎ, কেবল ক্ষমতা ও ব্যাবস্থার পালাবদল নিজেদের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হতে পারেনা। বরং, যেহেতু আদর্শিক বিপ্লব ব্যাতীত মানুষ ও সমাজের সামগ্রিক পরিবর্তন সম্ভব না, সেহেতু আমরা কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার কথা বলছি।
শায়খ আবু কাতাদা আল ফিলিস্তিনি বলেন,
এজন্যই ইসলামে রাষ্ট্রক্ষমতা হচ্ছে ইবাদাতে পূর্ণতালাভের অন্যতম মাধ্যম। তামকিন বা কর্তৃত্ব ছাড়া তাওহীদ ও ইবাদাত পরিপূর্ণতা লাভ করে না। তামকিন ছাড়া শারীআ বাস্তবায়ন ও মুসলিমদের নিরাপত্তা-বিধান সম্ভব হয় না। শারীআর তামকিনের মাধ্যমে কিতাব ও নবী সা প্রেরণের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ হয়।
শায়খ আবু কাতাদা বলেন,
“আল্লাহর দ্বীনে ইমামাত বা নের্তৃত্ব একটি কাঙ্ক্ষিত বিষয়। ইমাম হওয়া ছাড়া পৃথিবীতে মুসলিমের ইবাদাত বাস্তবায়িত হয় না। আমরা ইমামাত ও ইমাম দ্বারা ঐ বিষয়গকে বোঝাচ্ছি, যা অর্জিত হয় বিজয় ও শক্তির মাধ্যমে। ক্ষমতাশীল হওয়ার মাধ্যমে। তাই পৃথিবীতে মুসলমানদের তামকিন যত বৃদ্ধি পাবে, তাদের ইবাদাতও তত বৃদ্ধি পাবে।
অনেক কুরআনী আয়াত ও নববি আদেশ এমন আছে, ক্ষমতায় থাকা ছাড়া যেগুলোর ওপর আমল করা সম্ভব না। যার ফলে আল্লাহর ইবাদাতে অপূর্ণাঙ্গতা থেকে যায়। হুদুদ, কাফেরদের ওপর কর্তৃত্বশীল থাকা এবং এমন অন্যান্য আদেশগুলোর ওপর কোনো মুসলমান ক্ষমতা ছাড়া আমল করতে পারবে না।”
সুতরাং, ইবাদাত বাস্তবায়নের জন্য তামকিন ও রাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। রাষ্ট্র নিজে স্বতন্ত্র বা চূড়ান্ত কোনো উদ্দেশ্য না, যেমনটা সেক্যুলার রাজনৈতিক চিন্তাধারায় মোহগ্রস্ত অনেক দল মনে করে থাকে। আর এই ভুল বুঝের কারণে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অজুহাতে তারা তাওহীদ ও ইবাদাতের মৌলিক অনেক বিষয়কেই দেয়ালে ছুড়ে ফেলে।
বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথ
রাষ্ট্র একটি জাগতিক বিষয়, যা সর্বজনীন। পার্থক্য শুধু মূল্যবোধের। একটি ইসলামি রাষ্ট্র ইসলামি শরিয়াতের ভিত্তিতে পরিচালিত, কমিউনিস্ট রাষ্ট্র কমিউনিজমের ওপর প্রতিষ্ঠিত। একইভাবে, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথও সুনির্দিষ্ট। আর শরিয়ত সেদিকেই আহবান করে যাতে আছে দুনিয়া আখিরাত উভয় জগতের কল্যাণ ও মর্যাদা।
তাই, বাস্তবতা উপলব্ধি করে শরীয়তের পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান অন্যদের তুলনায় সহজ ও দ্রুততমভাবে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে। কেননা, মুসলিমদের সাথে রয়েছে আল্লাহ তাআলার তাওফিক, ওয়াদা ও সাহায্য। আরও রয়েছে সর্বোত্তম পথনির্দেশ, কুরআন ও সুন্নাহ ।
আর সমাজ ও রাস্ট্রের আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্যে আদর্শিক বিপ্লব অপরিহার্য। ইতিহাসের আলোকে আদর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন বিপ্লবের কয়েকটি স্তর অতিক্রম করতেই হয় মর্মে আমরা দেখতে পাই। আমাদের কাঙ্ক্ষিত বৈপ্লবিক পরিবর্তনের রূপরেখার ব্যাপারে একটি খসড়া ধারণা আমরা এর আলোকে বুঝতে পারি। স্তরগুলো হলো-
১। আদর্শিক দাওয়াহর আত্মপ্রকাশ। যা ন্যারেটিভ বিনির্মাণ, বিপ্লবী আদর্শ ধারণকারী অগ্রগামী ব্যক্তিদের (যাদের অন্তরে দীনের বুঝ ও চেতনা প্রবেশ করেছে। যারা আত্মত্যাগী দূরদর্শী-জ্ঞানী) সংগঠিত হওয়ার মাধ্যমে শুরু হয়।
২। বিপ্লবী সংগঠিত শক্তির মাধ্যমে সমাজে আদর্শিক দাওয়াহর ব্যাপক প্রচার-প্রসার। এক্ষেত্রে তারা শত প্রলোভন ও বাধার মুখেও সমাজে আদর্শের মূর্তরূপ হিসেবে নিজেদের অবস্থান জানান দেয় ও বিকশিত হতে থাকে।
৩। বৈপ্লবিক সংগঠিত শক্তির ধারাবাহিক আত্মত্যাগ ও নের্তৃত্বের ফলে সমাজে আদর্শিক মেরুকরণ সম্পন্ন করা হয়। যা সম্পন্ন হবে আত্মত্যাগী, দৃঢ় ও শক্তিশালী দাওয়াহ ও সাংগঠনিক মেহনতের মাধ্যমে।
আমাদের প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে- সেক্যুলার রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে বিপ্লবী শক্তির নের্তৃত্বে থাকা ইসলামপন্থীদের ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি হওয়া। (যেমন- ২০১৩ এর আগেও হেফাজত শক্তিশালী ছিল। শাহবাগ কেবল তাদের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে সাহায্য করে।)
৪। মেরুকরণ সম্পন্ন হবার পর বিপ্লবী পরিস্থিতি প্রস্তুতে কর্মসূচি তীব্রতর করা, যেন পূর্বতন ব্যাবস্থার প্রতিস্থাপনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। এবং পরিস্থিতি ও সামর্থ্য অনুযায়ী তীব্র সংঘাতের পথ মারিয়ে পূর্বতন শাসনব্যাবস্থাকে পরিবর্তন করা।
৫। শাসনব্যবস্থা প্রতিস্থাপন পরবর্তী কার্যক্রম। এই স্তরটিই সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ধারণ করবে। যে স্তরের জন্যই মূলত পূর্ববর্তী স্তরগুলোর প্রস্তুতি নেয়া হয়। যে স্তরে সাধারণত অধিকাংশ আন্দোলন ব্যার্থ হয়।
৬। ক্রমাগত শক্তি ও প্রভাব বৃদ্ধি করা। সভ্যতাগত উপাদানগুলো সক্রিয় ও বিকশিত করা।
আশা করি দীনের কর্তৃত্ব অর্জনের লক্ষ্যে তাজদিদি আন্দোলনের রূপরেখা কেমন হতে পারে, প্রাথমিকভাবে তার একটি ধারণা সংক্ষেপে তুলে ধরা সম্ভব হলো। আর বিস্তারিত আলোচনার স্থানও এটি নয়।
এলক্ষ্য অর্জনে বিশুদ্ধ আকিদা, সুনির্দিষ্ট মানহাজ ও পরিকল্পনার আলোকে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে- সংগঠিত শক্তি হিসেবে গড়ে ওঠা এবং দীন কায়েমের পথে সার্বক্ষনিক ব্যক্তিগত দায়িত্বের প্রতি সজাগ থাকা অপরিহার্য।
অত:পর, ইসলামের কর্তৃত্বের লক্ষ্যে বের হওয়া সকলের জন্য কিছু কথা বলা জরুরি। কেননা, কুফরের শক্তি খর্ব করা এবং ইসলামকে ক্রমাগত শক্তিশালী করার লক্ষ্য থেকে উদাসীনতা ও বিচ্যতিও প্রায়ই আমাদের ঘটে থাকে। তাই কিছু বিষয় ভুলে যাবার সুযোগ নেই -
• আমরা এই উম্মতের, এই জাতির একটি অংশমাত্র। আমরা জাতির খাদেম। বিশেষ মর্যাদার কেউ নই। আমরা আত্মত্যাগ পরিশ্রম করতে চাই যেন জাতি তার দীন, নিরাপত্তা ও কল্যান ফিরে পায়। যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম হিদায়াত ও হক্বের উপর অবিচল থাকে। আর আমরা এর বিনিময়ে আল্লাহ অভিমুখী, মুত্বমাইন অন্তর এবং পরিশেষে আখিরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।
• উম্মাহর 'উলামা, দাঈ ও চিন্তাবিদরাই আমাদের প্রকৃত পথপ্রদর্শক। সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তি অর্জনে এবং বিকাশে তারা আমাদের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হোক বা না হোক- তাদের পরামর্শ, নসিহত, আলোচনা ও দিকনির্দেশনার প্রতি আমরা সজাগ থাকি, থাকব। বহু বছর ধরে তারাই ইসলামের স্বপক্ষে সেক্যুলার-তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধে মেরুকরণ তথা জনমত গঠন এবং আপামর মানুষের মাঝে ইসলামি চেতনা সঞ্চারণ করেছেন ও করে চলেছেন। তাদের ইলমী ও ফিকরী নেতৃত্ব আমাদের স্বীকার করতে হবে। চাই কিছু বিষয়ে ইজতিহাদী মতপার্থক্য হোক না কেন।
উলামা, দাঈ ও চিন্তাবিদদের বক্তব্য, লেখনী, পরামর্শ ও গবেষণা সংগঠিত শক্তির জন্য তেমন ই জরুরী; যেমনটা ফসল উৎপাদনে কৃষকের জন্য অপরিহার্য উর্বর জমিন, উন্নত বীজ আর বৃষ্টি। এখানে আমরা সকলেই একে-অপরের পরিপূরক। কেউ কারো প্রতিপক্ষ নই। ঘুনাক্ষরে, নিজের অজান্তেও মানুষিকতা যা অন্তরে এর ব্যতয় ঘটা আমাদের ব্যর্থতা ও ধংসের কারণ হবে। আমাদের ঐক্যের মূল ভিত্তি ইসলাম। উদ্দেশ্যও ইসলাম। বাকী সব মাধ্যম মাত্র।
• ভুল-ত্রুটি, গুনাহ, বিদআত যা ই থাকুক- ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ও ব্যাপক ভূমিকা গ্রহণ করেনি - এমন সকল মুসলিম ব্যাক্তি, ইসলামি জামাআত (চাই রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক বা অগণতান্ত্রিক)ও মাসলাক আমাদের মিত্র। এমনকি ইসলামের শত্রুভাবাপন্ন নয় এমন সেক্যুলার, কুফফাররাও যেন আমাদের প্রতিপক্ষে পরিণত না হয়ে, ইসলামের পক্ষে থাকে সেজন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। এমনকি মৌন/নিস্ক্রিয় বিরোধীরাও যেন সরব/সক্রিয় ভাবে ইসলামের বিরোধী না হয়ে ওঠে সেই চেষ্টা করতে হবে। উল্লেখ্য, সংগঠনের বা ব্যাক্তির বিরোধিতা মাত্রই ইসলামের বিরোধিতা না।
• তাওহীদি আক্বিদার বিশ্বাসী, সালাত আদায়কারী ও যাকাত দানকারী প্রত্যেক মুসলিম ই আমাদের দীনি ভাই। দীনি ভাইয়ের অন্য কোন মানদন্ড নেই। কাজের খাতিরে সম্পর্ক বা সাংগঠনিক মিত্রতাকে দীনি ভ্রাতৃত্বের মানদণ্ড বানানো ভয়ংকর প্রবণতা। তাক্বওয়া, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ও আত্মত্যাগের ভিত্তিতেই সবাই ভালোবাসা ও শ্রদ্বার পাত্র হবে।
• মাযহাব, তাকলীদ, তাকফীর ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ির, তর্কাতর্কির সুযোগ নেই। গ্রহণযোগ্য উলামাদের মতকে আকড়ে ধরে ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই। পাশাপাশি ধারাবাহিক ইলম অর্জন, মুযাকারা ও মাশোয়ারা জারি রাখা চিন্তা ও অন্তরের উন্নতির জন্য জরুরি।
সারসংক্ষেপ
وَأَنزَلْنَآ إِلَيْكَ ٱلْكِتَـٰبَ بِٱلْحَقِّ مُصَدِّقا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ ٱلْكِتَـٰبِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ ۖ فَٱحْكُم بَيْنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ ۖ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَآءَهُمْ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلْحَقِّ ۚ لِكُلٍّۢ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا ۚ
আর আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি যথাযথভাবে, এর পূর্বের কিতাবের সত্যায়নকারী ও এর উপর তদারককারীরূপে। সুতরাং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তুমি তার মাধ্যমে ফয়সালা কর এবং তোমার নিকট যে সত্য এসেছে, তা ত্যাগ করে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি শরীআত ও স্পষ্ট পন্থা।
আল-মা’ইদাহ ৫:৪৮
এই আয়াত থেকে আমরা দেখতে পারি যে-
১. সেক্যুলারিজমকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যেহেতু, আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন-কানুন, বিচারব্যাবস্থা সবই আহলে কিতাব (ইহুদি-খ্রিস্টান) দের প্রণীত, যার মূলভিত্তি বাইবেল (তথা নিউ+ওল্ড টেস্টামেন্ট) ও তাদের লিবারেল-সেক্যুলারিজম/ডেমোক্রেসি। ব্রিটিশরা জোরপূর্বক এদেশে উপনিবেশবাদের সময় আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে যায়। যার ধারাবাহিকতা তাদেরই মতাদর্শের সেক্যুলার রাজনীতিবিদরা আজো ধরে রেখেছে।
২. সেক্যুলারিজম প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং শরীয়াহ দ্বারা শাসন ও বিচার ফয়সালা করতে হবে; অর্থাৎ ইসলামি শাসনব্যাবস্থা/শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৩. সেক্যুলারদের চিন্তাধারার আনুগত্য করা যাবে না। অর্থাৎ, লিবারেল-গণতন্ত্র, নারীবাদ, জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি জাহেলি চিন্তাধারা প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
৪. আল্লাহ তায়ালা কিতাব নাযিল-রাসূল(সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রেরণের মাধ্যমে শরীয়াহ প্রণয়ন করেছেন। যা আমাদের ব্যাক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৫. পাশাপাশি শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার উপযোগী কর্মপদ্ধতিও (মানহাজ) নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার পথে শরঈ মূলনীতি ও বাস্তবতার আলোকে মানহাজ নির্দিষ্ট করতে হবে।
এ বিষয়গুলো যদি আমরা খেয়াল রেখে, অন্তরে ধারণ করে ধারাবাহিক, পরিকল্পিত ও ইখলাসপূর্ণ দাওয়াহ, কর্মসূচী ও আত্মত্যাগ জারি রাখি – বি ইয নিল্লাহ। আল্লাহ তা'আলা আমাদের দুনিয়া-আখিরাতে কল্যান দান করবেন। আল্লাহর পথে চেষ্টাকারী হিসেবে কবুল করে নিবেন।
وَمَن جَـٰهَدَ فَإِنَّمَا يُجَـٰهِدُ لِنَفْسِهِۦٓ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَغَنِىٌّ عَنِ ٱلْعَـٰلَمِينَ
আর যে চেষ্টা করে সে তো তার নিজের জন্যই চেষ্টা করে। নিশ্চয় আল্লাহ সৃষ্টিকুল থেকে প্রয়োজনমুক্ত।
আল-আনকাবূত 29:6
وَٱلَّذِينَ جَـٰهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَمَعَ ٱلْمُحْسِنِينَ
আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন।
আল-আনকাবূত 29:69
مَا عِندَكُمْ يَنفَدُ ۖ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ بَاقٍۢ ۗ وَلَنَجْزِيَنَّ ٱلَّذِينَ صَبَرُوٓا أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
তোমাদের নিকট যা আছে তা ফুরিয়ে যায়। আর আল্লাহর নিকট যা আছে তা স্থায়ী। আর যারা সবর করেছে, তারা যা করত তার তুলনায় অবশ্যই আমি তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দেব।
আন-নাহ্ল 16:96
مَنْ عَمِلَ صَـٰلِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُۥ حَيَوٰةً طَيِّبَةً ۖ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
যে মুমিন অবস্থায় নেক আমল করবে, পুরুষ হোক বা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তারা যা করত তার তুলনায় অবশ্যই আমি তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দেব।
আন-নাহ্ল 16:97
وَجَـٰهِدُوا فِى ٱللَّهِ حَقَّ جِهَادِهِۦ ۚ هُوَ ٱجْتَبَىٰكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِى ٱلدِّينِ مِنْ حَرَجٍۢ ۚ مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَٰهِيمَ ۚ هُوَ سَمَّىٰكُمُ ٱلْمُسْلِمِينَ مِن قَبْلُ وَفِى هَـٰذَا لِيَكُونَ ٱلرَّسُولُ شَهِيدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُونُوا شُهَدَآءَ عَلَى ٱلنَّاسِ ۚ فَأَقِيمُوا ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا ٱلزَّكَوٰةَ وَٱعْتَصِمُوا بِٱللَّهِ هُوَ مَوْلَىٰكُمْ ۖ فَنِعْمَ ٱلْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ ٱلنَّصِيرُ
আর তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ কর যেভাবে জিহাদ করা উচিৎ। তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। দীনের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের দীন। তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন ‘মুসলিম’ পূর্বে এবং এ কিতাবেও। যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা মানুষের জন্য সাক্ষী হও। অতএব তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে মজবুতভাবে ধর। তিনিই তোমাদের অভিভাবক। আর তিনি কতই না উত্তম অভিভাবক এবং কতই না উত্তম সাহায্যকারী!
আল-হাজ্জ 22:78